যেসব পরিবারে অটিস্টিক শিশু রয়েছে সেই অভিভাবদের নিজেদের সন্তানকে সামলাতে গিয়ে বিভিন্ন অসুবিধার সম্মুখীন হতে হয় । তবে চিকিৎসক, কাউন্সিলিং ও শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সহায়তায় অভিভাবকরা কিছুটা হলেও এই সমস্যা কাটিয়ে উঠতে পারেন । এদিকে, কোরোনা মোকাবিলায় সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার জন্য স্কুল বা অটিস্টিক শিশুদের জন্য স্পেশাল ক্লাসগুলিও বন্ধ রয়েছে । তাদের সব সময় বাড়িতেই থাকতে হচ্ছে । তাই তাদের কথা ভেবে বিশেষ ডিজ়াইন কোর্সের মাধ্যমে এই সমস্ত শিশুদের কাছে পৌঁছে যাচ্ছে বিভিন্ন সংস্থা ।
একটি অটিজ়ম ম্যানেজমেন্ট সংস্থার ডিরেক্টর ডঃ মল্লিকা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “লকডাউনের ফলে আমাদের গৃহবন্দি হতে হয়েছে স্বাথ্যের কথা মাথায় রেখে । আমাদের মন ভালো নেই । তবে এর একটা ভালো দিকও রয়েছে । যেমন এর আগে আমরা কখনও অনলাইনের মাধমে এই শিশুদের কোনও কোর্স বা প্রশিক্ষণ দিইনি । তবে এখন প্রত্যেক দিন শিক্ষক-শিক্ষিকারা ঠিক ক্লাসে যেমনভাবে প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকেন সেভাবেই ক্লাসগুলি শুট করে অভিভাবকদের কাছে পৌঁছে দিচ্ছেন । ছেলেমেয়েদের পাশাপাশি আমরাও এই পদ্ধতি অবলম্বন করে অনেক কিছু শিখতে পারছি । এছাড়া বিভিন্ন চার্ট ও ছবির মাধ্যমেও চলছে প্রশিক্ষণ । দিনের শেষে অভিভাবকদের থেকে আমরা সারাদিনের একটি রিপোর্ট ও নিচ্ছি । আমরা বারবার অভিভাবকদের বলছি সন্তানদের সৃষ্টির আনন্দ দিতে । এর ফলে তাদের অনেক আত্মবিশ্বাস বাড়ে ।”
ডঃ অদিতি বন্দ্যোপাধ্যায়ের সংস্থার মাধ্যমে এই ধরনের বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের ডান্স মুভমেন্ট থেরাপির মাধ্যমে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় । তিনি বলেন, “এই ধরনের মানুষ একটা ছকে বাঁধা নিয়মের মধ্যে দিয়ে চলে । কিন্তু বর্তমানে সেই বাঁধা গতির ছন্দ পতন হওয়াতে তারা খুব বেশি হাইপার এক্টিভ হয়ে পড়ছে । এইসময় সাধারণত আঁকার ক্লাস, গ্রুপ ক্লাস, সাঁতারের ক্লাস-সহ আরও অন্যান্য ক্রিয়া থাকে । এখন সেসব বন্ধ রয়েছে। তাই আমরা বিভিন্ন ধরণের অনলাইন সেশন বা থেরাপির মাধ্যমে অনেকটা সময় তাদের আটকে রাখা চেষ্টা করছি । আমি ক্লাসে অটিস্টিক শিশুদের ডান্স মুভমেন্ট থেরাপি করিয়ে থাকি ৷ এখন সেটাই অনলাইনের মাধ্যমে করছি । শুধু শিশুদেরই নয়, বড়রা যারা এই সমস্যায় আক্রান্ত তাঁদের জন্যেও বিভিন্ন হাতের কাজের ক্লাস, নাচের ক্লাস, গানের ক্লাস বা আঁকার ক্লাস চালানো হয়েছে । এদের বিভিন্নরকম শারীরিক সমস্যা থাকে । তাই এই সংস্থার মাধ্যমে স্বাস্থ্য সম্পর্কিত হেল্পলাইনও শুরু করা হয়েছে । এখানে রয়েছেন 27জন চিকিৎসক । চিকিৎসকরা পরামর্শ দিচ্ছেন যে এইসময় অটিস্টিক শিশুদের বিভিন্ন অকুপেশোনাল থেরাপি বা বাড়ির কিছু কিছু কাজ করানো দরকার ।”